Wednesday 4 October 2017

ভাবা যায়...!! এরা কারা...?

ভাবা যায়...!! এরা কারা...?

ক্লাস এইট এর বাংলা পরীক্ষাঃ - ’বিদ্যাসাগর’ রচনা !!
এক ছাত্র লিখলঃ "বিদ্যাসাগর পরোপকারী ছিলেন। পরের উপকার করতেন।
বিধবা দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়তেন ..."
--------------------------------------------------------------------
ক্লাস ফাইভের বাংলা পরীক্ষাঃ - ’গরু’ রচনা !!
ছাত্রী উপসংহারে লিখলঃ "ইহার স্বামীর নাম ষাঁড়"।
--------------------------------------------------------------------
ক্লাস সিক্স। প্রশ্ন - লিঙ্গ পরিবর্তন করো - ‘দেব’
ছাত্রীঃ "শুভশ্রী" !!
--------------------------------------------------------------------
রবীন্দ্রজয়ন্তীতে এক ছাত্রীর কবিতা আবৃত্তি
নমস্কার তালগাছ
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একপায়ে দাড়িয়ে,
সবগাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে।
-----------------------------------------------------------------
নবম শ্রেনীঃ ‘এক কথায় প্রকাশ’ - "যাহা সহজে ভাঙিয়া যায়"
ছাত্র লিখলোঃ - মাটির ভাঁড়।
--------------------------------------------------------------------
একাদশ শ্রেনীঃ ’দেওয়ান ই আম’ আর ’দেওয়ান ই খাস’ কি ?
ছাত্রঃ দেওয়ানরা খুব বড়লোক ছিলো তারা প্রচুর আম গাছ পুতেছিলো তাকেই দেওয়ানী আম বলে।
আবার ওই দেওয়ানের লাগানো আম গুলি কে জগত বিখ্যাত করার জন্য.....দেওয়ান নিজে আম গুলিকে খাস ঘোষনা করেছিলো তাই ওই আম গুলিকে দেওয়ানী খাস আম বলে।
-------------------------------------------------------------------
নবম শ্রেনীঃ Translate into English "ছেলেটি এতই দুর্বল যে হাঁটতে পাড়েনা “
ছাত্রীঃ " 6eleti etoi durbol j hat_te parena "
--------------------------------------------------------------------
সপ্তম শ্রেনীঃ বিজ্ঞান পরীক্ষা - ’তুঁতে কী কাজে লাগে ?’
ছাত্রীঃ আত্মহত্যার কাজে লাগে। আমাদের পাশের বাড়ির বউটা তুঁতে খেয়ে মরেছিল।

Saturday 30 September 2017

মহরমের গুরুত্ব

মহরমের গুরত্বঃ 


১. সমগ্র জগৎ সৃষ্টির দিন। 
২. এদিন কেয়ামত অনুষ্টিত হবে। 
৩. হযরত আইয়ুব (আঃ) কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। 
৪. হযরত ঈসা (আঃ) জন্মগ্রহন করেছিলেন। 
৫. হযরত দাউদ (আঃ) আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করেছিলেন। 
৬. হযতর সোলেমান (আঃ) তার হারানো রাজত পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছিলেন। 
৭. হযরত ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। 
৮. হযরত ইয়াকুব (আঃ) তার হারানো পুত্র হযরত ইউসুফ (আঃ) কে চল্লিশ বছর পর ফিরে পেয়েছিলেন । 
৯. ফেরাউনের স্ত্রী বিবি আছিয়া শিশু মুসাকে গ্রহন করেছিলেন। 
১০.মহা প্লাবনের সময় হযরত নূহ (আঃ) এর নৌকা তার অনুসারীদের নিয়ে জুদি পাহাড়ের পাদদেশে এসে থেমেছিল। 
১১. এই দিনে স্বেরসারী ইয়াজিদ বাহিনী বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর প্রাণাধিন দৌহিত্র অতুতভয় সৈনিক হযতর ইমাম হোসাই (রাঃ) কে একজন ব্যতিত সপরিবারে কারবালার মরু প্রান্তরে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।

Thursday 11 May 2017

শবে বরাত কী..? এর অর্থ ও ফজিলত..॥


যে বিষয় কুরআন শরীফ এবং হাদীস
শরীফে আলোচনা করা হয়েছে তাকে তুচ্ছ
তাচ্ছিল্ল করা কখনোই মু’মিন
বান্দার কাজ নয় । বরং তা পালন
করা হচ্ছে মু’মিনগণের একটি গুণ।
আর শবে বরাত একটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় ।নিচে এর গুরুত্ব
সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হল
দয়া করে সম্পূর্ণ
বিষয়টি পড়বেন এবং আমল করবেন
কারন এটি এমন একটি রাত
যাতে আল্লাহ পাক বান্দার
সামনের একবছরে সকল বিষয়ের
ফয়সালা করা হয় এবং অনেক
বান্দাদের ক্ষমা করা হয় ,আর
এটি দুয়া কবুলের একটি খাছ
রজনী। নিচে দলীল ভিত্তিক
আলোচনা করা হল:
শবে বরাত কি?
শবে বরাত হচ্ছে ইসলামের বিশেষ
রাত্রিসমূহের মধ্যে একটি রাত্র।
যা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ
দিবাগত রাত্রিতে হয়ে থাকে।
শবে বরাত-এর অর্থ হচ্ছে ‘মুক্তির
রাত’ বা ‘নাজাতের রাত।’
শবে বরাত সম্পর্কে কুরআন শরীফ
ও হাদীছ শরীফ-এ বর্ণনা
‘শব’ ফার্সী শব্দ। যার অর্থ
হচ্ছে, রাত। আর বরাত
আরবী শব্দ যা উর্দূ, ফার্সী,
বাংলা ইত্যাদি সব ভাষাতেই
ব্যবহার হয়ে থাকে। যার অর্থ
‘মুক্তি’ ও ‘নাজাত’ ইত্যাদি।
কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর
ভাষা যেহেতু আরবী তাই
ফার্সী ‘শব’ শব্দটি কুরআন শরীফ
ও হাদীছ শরীফ-এ না থাকাটাই
স্বাভাবিক।
স্মর্তব্য যে, কুরআন শরীফ-এর
ভাষায় ‘শবে বরাতকে’ ‘লাইলাতুম
মুবারাকাহ বা বরকতময় রজনী’
এবং হাদীছ শরীফ-এর ভাষায়
শবে বরাতকে ‘লাইলাতুন
নিছফি মিন শা’বান’ বা শা’বানের
চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত’
বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
যেমন আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ
করেন-
ﺍﻧﺎ ﺍﻧﺰﻟﻨﻪ ﻓﻰ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﺒﺮﻛﺔ ﺍﻧﺎ
ﻛﻨﺎ . ﻦﻳﺭﺬﻨﻣ ﻓﻴﻬﺎ ﻳﻔﺮﻕ ﻛﻞ
ﺍﻣﺮ . ﻢﻴﻜﺣ ﺍﻣﺮﺍ ﻣﻦ ﻋﻨﺪﻧﺎ ﺍﻧﺎ
ﻛﻨﺎ ﻣﺮﺳﻠﻴﻦ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি বরকতময়
রজনীতে (শবে বরাতে) কুরআন
শরীফ নাযিল করেছি অর্থাৎ
নাযিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর
আমিই ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত
রাত্রিতে আমার পক্ষ
থেকে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজ
গুলো ফায়সালা করা হয়। আর
নিশ্চয়ই আমিই
প্রেরণকারী।” (সূরা দুখান-৩, ৪,
৫)
আর হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত
রয়েছে-
ﻋﻦ ﺍﻡ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﻋﺎﺋﺸﺔ
ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻗﺎﻟﺖ ﻓﻘﺪﺕ
ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻴﻠﺔ ﻓﺎﺫﺍ ﻫﻮ ﺑﺎﻟﺒﻘﻴﻊ
ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻛﻨﺖ ﺗﺨﺎﻓﻴﻦ ﺍﻥ ﻳﺤﻴﻒ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻚ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ﻗﻠﺖ ﻳﺎ
ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻧﻰ ﻇﻨﻨﺖ ﺍﻧﻚ ﺍﺗﻴﺖ
ﺑﻌﺾ ﻧﺴﺎﺋﻚ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻳﻨﺰﻝ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ
ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ
ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻻﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﻋﺪﺩ ﺷﻌﺮ
ﻏﻨﻢ ﻛﻠﺐ
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত
আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম-উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ পাক-
উনার হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
সাথে কোন এক
রাত্রিতে রাত্রিযাপন করছিলাম।
এক সময় উনাকে বিছানা মুবারক-এ
না পেয়ে আমি মনে করলাম যে,
তিনি হয়তো অন্য কোন উম্মুল
মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম
উনাদের হুজরা শরীফে তাশরীফ
নিয়েছেন। অতঃপর আমি তালাশ
করে উনাকে জান্নাতুল
বাক্বীতে পেলাম।
সেখানে তিনি উম্মতের জন্য
আল্লাহ পাক-উনার নিকট
ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। এ
অবস্থা দেখে আমি স্বীয়
হুজরা শরীফে ফিরে আসলে তিনিও
ফিরে এসে আমাকে বললেন,
আপনি কি মনে করেছেন, আল্লাহ
পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা ও
উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা আপনার সাথে আমানতের
খিয়ানত করেছেন! আমি বললাম,
ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আমি ধারণা করেছিলাম যে,
আপনি হয়তো অপর কোন
হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন।
অতঃপর হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ
পাক তিনি শা’বানের ১৫ তারিখ
রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ
করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল
করেন। অতঃপর তিনি বনী কালবের
মেষের গায়ে যতো পশম
রয়েছে তার চেয়ে অধিক সংখ্যক
বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন।” (তিরমিযী,
ইবনে মাজাহ, রযীন, মিশকাত)
অতএব প্রমাণিত হলো যে,
কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফেই
শবে বরাতের কথা উল্লেখ আছে।
তবে কুরআন শরীফে বরাতের
রাতকে ‘লাইলাতুম মুবারকাহ’ আর
হাদীছ শরীফে ‘লাইলাতুন
নিছফি মিন শা’বান’ বলা হয়েছে।
অনেকে বলে থাকে যে, সূরা দুখান-
এর উক্ত আয়াত শরীফ
দ্বারা শবে ক্বদরকে বুঝানো হয়েছে।
কেননা উক্ত আয়াত
শরীফে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে,
“আমি কুরআন শরীফ নাযিল
করেছি ….” আর কুরআন শরীফ
যে ক্বদরের রাত্রিতে নাযিল
হয়েছে তা ‘সূরায়ে ক্বদরেও’
উল্লেখ আছে।
মূলতঃ যারা উপরোক্ত মন্তব্য
করে থাকে তারা ‘সূরা দুখান-এর’
উক্ত আয়াত শরীফ-এর সঠিক
ব্যাখ্যা না জানা ও না বুঝার
কারণেই করে থাকে। মহান
আল্লাহ পাক যে ‘সূরা দুখান’-এ
বলেছেন, “আমি বরকতময়
রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল
করেছি।” এর ব্যাখ্যামূলক অর্থ
হলো, “আমি বরকতময়
রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিলের
ফায়সালা করেছি।”
আর ‘সূরা ক্বদরে’ যে বলেছেন,
“আমি ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন
শরীফ নাযিল করেছি।” এর
ব্যাখ্যামূলক অর্থ হলো,
“আমি ক্বদরের রাত্রিতে কুরআন
শরীফ নাযিল শুরু করি।” অর্থাৎ
মহান আল্লাহ পাক “লাইলাতুম
মুবারকাহ বা শবে বরাতে” কুরআন
শরীফ নাযিলের সিদ্ধান্ত নেন
আর শবে ক্বদরে তা নাযিল
করা শুরু করেন।
এজন্যে মুফাসসিরীনে কিরাম
রহমতুল্লাহি আলাইহিম
উনারা শবে বরাতকে ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺘﺠﻮﻳﺰ
অর্থাৎ ‘ফায়সালার রাত।’ আর
শবে ক্বদরকে ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺘﻨﻔﻴﺬ
অর্থাৎ ‘জারী করার রাত’
বলে উল্লেখ করেছেন।
কেননা শবে বরাতে যে সকল
বিষয়ের ফায়সালা করা হয়
তা ‘সূরা দুখান-এর’ উক্ত আয়াত
শরীফেই উল্লেখ আছে। যেমন
ইরশাদ হয়েছে-
ﻓﻴﻬﺎ ﻳﻔﺮﻕ ﻛﻞ ﺍﻣﺮ ﺣﻜﻴﻢ
অর্থাৎ- “উক্ত
রজনীতে প্রজ্ঞাসম্পন্ন সকল
বিষয়ের ফায়সালা করা হয়।”
হাদীছ শরীফেও উক্ত আয়াতাংশের
সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন ইরশাদ
হয়েছে-
ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻥ ﻳﻜﺘﺐ ﻛﻞ ﻣﻮﻟﻮﺩ ﻣﻦ
ﺑﻨﻰ ﺍﺩﻡ ﻓﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺴﻨﺔ
ﻭﻓﻴﻬﺎ ﺍﻥ ﻳﻜﺘﺐ ﻛﻞ ﻫﺎﻟﻚ ﻣﻦ
ﺑﻨﻰ ﺍﺩﻡ ﻓﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺴﻨﺔ
ﻭﻓﻴﻬﺎ ﺗﺮﻓﻊ ﺍﻋﻤﺎﻟﻬﻢ ﻭﻓﻴﻬﺎ
ﺗﻨﺰﻝ ﺍﺭﺯﺍﻗﻬﻢ
অর্থাৎ- “বরাতের
রাত্রিতে ফায়সালা করা হয়
কতজন সন্তান আগামী এক বৎসর
জন্ম গ্রহণ করবে এবং কতজন
সন্তান মৃত্যু বরণ করবে। এ
রাত্রিতে বান্দাদের
আমলগুলো উপরে উঠানো হয়
অর্থাৎ আল্লাহ পাক-উনার
দরবারে পেশ করা হয় এবং এ
রাত্রিতে বান্দাদের রিযিকের
ফায়সালা করা হয়।” (বায়হাক্বী,
মিশকাত)
কাজেই, আল্লাহ পাক
তিনি যেহেতু বলেছেন যে, বরকতময়
রজনীতে সকল কাজের
ফায়সালা করা হয় আর উনার
হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও
যেহেতু বলেছেন যে, বরাতের
রজনীতেই সকল বিষয় যেমন-
হায়াত, মউত, রিযিক, আমল
ইত্যাদি যা কিছু মানুষের
প্রয়োজন হয়ে থাকে তার
ফায়সালা করা হয় সেহেতু বলার
অপেক্ষা রাখেনা যে, “সূরা দুখান-
এর” উক্ত আয়াত শরীফ
দ্বারা শবে বরাতকেই
বুঝানো হয়েছে।
[দলীলসমূহ: (১) সূরা দুখান (২)
তাফসীরে দুররে মনছূর, (৩)
কুরতুবী, (৪) মাযহারী, (৫)
তিরমিযী, (৬) ইবনে মাজাহ, (৭)
বায়হাক্বী, (৮) মিশকাত, (৯)
মিরকাত, (১০) আশয়াতুল লুময়াত,
(১১) লুময়াত, (১২) ত্বীবী, (১৩)
তালীক্ব, (১৪) মুযাহিরে হক্ব
ইত্যাদি।]
শবে বরাতকে কেন্দ্র
করে আতশবাজি ও
আলোকসজ্জা করা
শবে বরাতে আলোকসজ্জা ও
আতশবাজি করা শরীয়ত সম্মত
নয়। ইতিহাসে উল্লেখ
করা হয়েছে যে,
আলোকসজ্জা হচ্ছে গ্রীক ধর্মের
একটি ধর্মীয় প্রথা। সেখান
থেকে পর্যায়ক্রমে হিন্দু ধর্মের
ধর্মীয় প্রথা হিসেবে রূপ লাভ
করে, যা শেষ পর্যন্ত
দেয়ালী পূজা নামে মশহূর হয়।
আলোকসজ্জা সেখান
থেকে পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের
মধ্যে প্রবেশ
করে যা প্রকৃতপক্ষে দ্বীন
ইসলামের শেয়ার বা তর্জ-
তরীক্বার অন্তর্ভুক্ত নয়। আর
আতশবাজিও দ্বীন ইসলামের
কোন শেয়ারের অন্তর্ভুক্ত নয়।
প্রকৃতপক্ষে আতশবাজিও হিন্দু
ধর্মের একটি ধর্মীয় প্রথার
অন্তর্ভুক্ত। তাই মুসলমানের
জন্য এসব করা সম্পূর্ণরূপে হারাম
ও নাজায়িয। কারণ হাদীছ
শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
ﻋﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ
ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ
ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ
ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু-উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি বলেন,
যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের
সাথে মিল বা সাদৃশ্য রাখবে তার
হাশর-নশর তাদের সাথেই
হবে।” (আহমদ, আবূ দাউদ)

প্রসঙ্গে একটি ওয়াক্বিয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য,
তা হলো হিন্দুস্তানে একজন
জবরদস্ত আল্লাহ পাক-উনার
ওলী ছিলেন। যিনি ইনতিকালের পর
অন্য একজন বুযুর্গ
ব্যক্তি উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞেস
করেন, “হে আল্লাহ পাক-উনার
ওলী, আপনি কেমন আছেন?”
আল্লাহ পাক-উনার
ওলী জাওয়াবে বলেন, “আপাতত
আমি ভালই আছি, কিন্তু আমার
উপর দিয়ে এক কঠিন সময়
অতিবাহিত হয়েছে, যা বলার
অপেক্ষা রাখেনা। আমার
ইনতিকালের পর আমাকে হযরত
ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম
উনারা সরাসরি আল্লাহ পাক
উনার সম্মুখে পেশ করেন।
আল্লাহ পাক তিনি হযরত
ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম
উনাদের বলেন, “হে হযরত
ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম!
আপনারা উনাকে কেন
এখানে নিয়ে এসেছেন”? হযরত
ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম
উনারা বলেন, “আয় আল্লাহ পাক!
আমরা উনাকে খাছ
বান্দা হিসেবে আপনার
সাথে সাক্ষাৎ করানোর জন্য
নিয়ে এসেছি।” এটা শুনে আল্লাহ
পাক তিনি বললেন, “উনাকে এখান
থেকে নিয়ে যান, উনার হাশর-নশর
হিন্দুদের সাথে হওয়া উচিৎ।
কেননা তিনি পুজা করেছেন।
আল্লাহ পাক উনার
ওলী তিনি বলেন,
এটা শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম
এবং আমার সমস্ত শরীর
ভয়ে কাঁপতে লাগলো। তখন
আমি আল্লাহ পাক-উনার নিকট
আরজু পেশ করলাম, “আল্লাহ
পাক! আমার হাশর-নশর হিন্দুদের
সাথে হবে কেন?
আমি তো সবসময় আপনার
এবং আপনার হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
ফরমাবরদার ছিলাম।
কখনো ইচ্ছাকৃত
নাফরমানি করিনি এবং কখনো পূজা করিনি আর
মন্দিরেও যাইনি।” আল্লাহ পাক
তিনি বললেন, “আপনি সেই দিনের
কথা স্মরণ করুন, যেদিন
হিন্দুস্তানে হোলি পুজা হচ্ছিলো।
আপনার সামনে-পিছনে, ডানে-
বামে, উপরে-নীচে সমস্ত গাছ-
পালা, তরু-লতা, পশু-পাখী, কীট-
পতঙ্গ সবকিছুকে রঙ
দেয়া হয়েছিলো। এমতাবস্থায়
আপনার সামনে দিয়ে একটি গর্দভ
(গাধা) হেঁটে যাচ্ছিলো যাকে রঙ
দেয়া হয়নি। তখন আপনি পান
চিবাচ্ছিলেন, আপনি সেই গর্দভের
গায়ে এক চিপটি পানের রঙ্গীন রস
নিক্ষেপ করে বলেছিলেন,
“হে গর্দভ! তোমাকে তো কেউ
রং দেয়নি এই হোলি পুজার দিনে,
আমি তোমাকে রং দিয়ে দিলাম।
এটা কি আপনার পুজা করা হয়নি?
আপনি কি জানেন না?”
ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ
অর্থ: “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের
সাথে মিল রাখে, সে তাদেরই
অন্তর্ভুক্ত হবে অর্থাৎ তার
হাশর-নশর তাদের সাথে হবে।”
কাজেই, “আপনার হাশর-নশর
হিন্দুদের সাথে হওয়া উচিৎ।”
যখন আল্লাহ পাক এ কথা বললেন
তখন আমি লা-জাওয়াব হয়ে গেলাম
এবং ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বললাম,
আয় আল্লাহ পাক!
আমি এটা বুঝতে পারিনি,
আমাকে কেউ বুঝিয়েও দেয়নি।
দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন।
কিছুক্ষণ পর আল্লাহ পাক
বললেন, “হ্যাঁ আপনাকে অন্যান্য
আমলের
কারণে ক্ষমা করা হলো।”
কাজেই, মুসলমানদের জন্য শুধু
শবে বরাতকেই কেন্দ্র করে নয়
বরং কোন অবস্থাতেই
আতশবাজি ও
আলোকসজ্জা ইত্যাদি বিধর্মী বিজাতীয়দের
কোন আমল করা সম্পূর্ণ
নিষিদ্ধ।
[দলীলসমূহ - (১) আহমদ, (২) আবূ
দাউদ, (৩) বযলুল মাজহূদ, (৪)
আউনুল মা’বূদ, (৫)
মাছাবাতা বিসসুন্নাহ, (৬) গ্রীক
জাতির ইতিহাস, (৭) হিন্দু ধর্মের
ইতিহাস ইত্যাদি।]
শবে বরাতের আমল
শবে বরাত হচ্ছে মুক্তি বা ভাগ্য
অথবা নাজাতের রাত। অর্থাৎ
বরাতের রাত্রিতে ইবাদত-
বন্দেগী করে ও
পরবর্তী দিনে রোযা রেখে আল্লাহ
পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদের
সন্তুষ্টি অর্জন করাই মূল
উদ্দেশ্য। শবে বরাতে কোন্ কোন্
ইবাদত-
বন্দেগী করতে হবে তা কুরআন
শরীফ ও সুন্নাহ শরীফে নির্দিষ্ট
করে দেয়া হয়নি। তবে ইবাদত-
বন্দেগী করার জন্য নির্দেশ
করা হয়েছে। যেমন হাদীছ
শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
ﻋﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﻋﻠﻰ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ
ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ
ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻘﻮﻣﻮﺍ ﻟﻴﻠﻬﺎ
ﻭﺻﻮﻣﻮﺍ ﻳﻮﻣﻬﺎ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻳﻨﺰﻝ ﻓﻴﻬﺎ ﻟﻐﺮﻭﺏ
ﺍﻟﺸﻤﺲ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ
ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺍﻻ ﻣﻦ ﻣﺴﺘﻐﻔﺮ
ﻓﺎﻏﻔﺮﻟﻪ ﺍﻻ ﻣﺴﺘﺮﺯﻕ ﻓﺎﺭﺯﻗﻪ
ﺍﻻ ﻣﺒﺘﻠﻰ ﻓﺎﻋﺎﻓﻴﻪ ﺍﻻ ﻛﺬﺍ ﺍﻻ
ﻛﺬﺍ ﺣﺘﻰ ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻔﺠﺮ
অর্থ: “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু-উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-উনার
হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ করেন, যখন
শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রি অর্থাৎ
বরাতের রাত্রি উপস্থিত হবে তখন
তোমরা উক্ত রাত্রিতে নামায
আদায়
করবে এবং দিনে রোযা রাখবে।
কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক
তিনি উক্ত রাত্রিতে সূর্যাস্তের
সময় পৃথিবীর আকাশে আসেন
অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন।
অতঃপর ঘোষণা করেন, “কোন
ক্ষমা প্র্রার্থনাকারী আছো কি?
আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।”
“কোন রিযিক
প্রার্থনাকারী আছো কি?
আমি তাকে রিযিক দান করবো।”
“কোন মুছিবতগ্রস্ত
ব্যক্তি আছো কি? আমি তার
মুছিবত দূর করে দিবো।”
এভাবে ফজর পর্যন্ত
ঘোষণা করতে থাকেন।” (ইবনে মাজাহ,
মিশকাত)
হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত
আছে-
ﻋﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﺍﺑﻰ ﻣﻮﺳﻰ
ﺍﻻﺷﻌﺮﻯ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ
ﻋﻨﻪ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻟﻴﻄﻠﻊ ﻓﻰ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ
ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﺠﻤﻴﻊ
ﺧﻠﻘﻪ ﺍﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙ ﺍﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦ
অর্থ: “হযরত আবু
মূসা আশআরী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি আল্লাহ
পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই
আল্লাহ পাক তিনি শা’বানের ১৫
তারিখ রাত্রিতে ঘোষণা করেন যে,
উনার সমস্ত
মাখলূকাতকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন।
শুধু মুশরিক ও হিংসা-
বিদ্বেষকারী ব্যতীত।
(ইবনে মাজাহ, আহমদ, মিশকাত)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফসমূহের
সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু হলো,
রাত্রিতে ইবাদত-
বন্দেগী করতে হবে এবং দিনে রোযা রাখতে হবে।
যার মাধ্যমে আল্লাহ পাক
বান্দাহকে ক্ষমা করে স্বীয়
সন্তুষ্টি দান করবেন।
বরাতের রাত্রিতে যেসব ইবাদত
করতে হবে তার সংক্ষিপ্ত
বর্ণনা দেয়া হলো-
বরাতের নামায: শবে বরাতে ৪, ৬,
৮, ১০, ১২ রাকায়াত নফল নামায
পড়া যেতে পারে।
ছলাতুত তাসবীহ নামায: অতঃপর
ছলাতুত তাসবীহ-এর নামায পড়বে,
যার দ্বারা মানুষের সমস্ত
গুণাহখতা ক্ষমা হয়।
তাহাজ্জুদ নামায: অতঃপর
তাহাজ্জুদের নামায পড়বে,
যা দ্বারা আল্লাহ পাক-উনার
নৈকট্য হাছিল হয়।
কুরআন শরীফ তিলাওয়াত: কুরআন
শরীফ তিলাওয়াত করবে, যার
মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা-উনার
সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
কেননা নফল ইবাদতের
মধ্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত
হচ্ছে সর্বোত্তম আমল।
মীলাদ শরীফ ও দুরূদ শরীফ পাঠ:
মীলাদ শরীফ ও দুরূদ শরীফ পাঠ
করবে, যার দ্বারা আল্লাহ পাক-
উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্
নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
যিকির-আযকার: যিকির-আযকার
করবে, যার দ্বারা দিল ইছলাহ হয়।
কবর যিয়ারত: কবরস্থান যিয়ারত
করবে, যার দ্বারা সুন্নত আদায়
হয়। তবে কবর বা মাযার শরীফ
যিয়ারত করতে গিয়ে সারারাত্র ব্যয়
করে দেয়া জায়িয হবেনা। সুন্নত
আদায়ের লক্ষ্যে নিকটবর্তী কোন
কবরস্থান যিয়ারত
করে চলে আসবে।
দান-ছদকা: গরীব-মিসকীনকে দান-
ছদকা করবে ও লোকজনদের খাদ্য
খাওয়াবে, যার দ্বারা হাবীবুল্লাহ
হওয়া যায়।
দোয়া-ইস্তিগফার: আল্লাহ পাক-
উনার নিকট দোয়া করবে, যার
কারণে আল্লাহ পাক খুশি হবেন ও
উনার নিয়ামত লাভ হবে। আর
সর্বশেষ খালিছ ইস্তিগফার ও
তওবা করবে, যার মাধ্যমে বান্দাহর
সমস্ত গুণাহ-খতা মাফ
হয়ে আল্লাহ পাক-উনার খালিছ
সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। অর্থাৎ
শ’বে বরাতের বারাকাত, ফুয়ূজাত,
নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত ও
নাজাত ইত্যাদি হাছিল করা যায়।
স্মরণীয় যে, অনেক
স্থানে দেখা যায় যে, লোকজন
ছুবহে ছাদিকের পর
আখিরী মুনাজাত করে থাকে।
মূলতঃ মুনাজাত যে কোন সময়েই
করা যায়। তবে বরাতের
রাতে দোয়া কবুল করার
যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা ছুবহ্ েছাদিকের
পূর্ব পর্যন্ত। এরপর বরাতের রাত
অবশিষ্ট থাকেনা। কেননা, হাদীছ
শরীফে স্পষ্টই বলা হয়েছে যে-
ﺣﺘﻰ ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻔﺠﺮ
অর্থ: “ফজর বা ছুবহে ছাদিক
পর্যন্ত আল্লাহ পাক
তিনি দোয়া কবুল করেন।” অতএব,
সকলের উচিৎ হবে মূল
বা আখিরী মুনাজাত
ছুবহে ছাদিকের পূর্বেই করা।
[দলীলসমূহ - (১)
তাফসীরে কুরতুবী, (২) মাযহারী,
(৩) রুহুল বয়ান, (৪) রুহুল মায়ানী,
(৫) খাযিন, (৬) বাগবী, (৭)
তিরমিযী, (৮) ইবনে মাজাহ, (৯)
আহমদ, (১০) রযীন, (১১) মিশকাত,
(১২) মিরকাত, (১৩) আশয়াতুল
লুময়াত, (১৪) লুময়াত, (১৫) ত্বীবী,
(১৬) ত্বালীক, (১৭) মুযাহিরে হক্ব
ইত্যাদি।]
শবে বরাতে ইবাদতে ব্যাঘাত
সৃষ্টি করে সারারাত্র ওয়াজ
মাহফিল করা
শবে বরাত হচ্ছে ইসলামের বিশেষ
রাত্রিসমূহের মধ্যে একটি রাত্রি।
যা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ
দিবাগত রাত্রিতে হয়ে থাকে।
শবে বরাত-এর অর্থ হচ্ছে মুক্তির
রাত্র বা নাজাতের রাত্র। এ
রাতে ওয়াজ-নছীহত করার আদেশও
নেই। আবার নিষেধও করা হয়নি।
তবে এ রাতে দোয়া কবুল করার ও
ইবাদত বন্দেগী করার কথাই হাদীছ
শরীফে ব্যক্ত হয়েছে। যেমন
আখিরী রসূল, রহমতুল্লিল
আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ করেন-
ﺍﻥ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻳﺴﺘﺠﺎﺏ ﻓﻰ ﺧﻤﺲ
ﻟﻴﺎﻝ ﺍﻭﻝ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻦ ﺭﺟﺐ ﻭﻟﻴﻠﺔ
ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻭﻟﻴﻠﺔ
ﺍﻟﻘﺪﺭ ﺍﻟﻤﺒﺎﺭﻛﺔ ﺍﻟﻌﻴﺪﻳﻦ
ﻭﻟﻴﻠﺘﻰ
অর্থ: “নিশ্চয়ই পাঁচ
রাত্রিতে দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল
হয়ে থাকে। (১) রজব মাসের প্রথম
রাতে, (২) শবে বরাতের রাতে, (৩)
ক্বদরের রাতে, (৪) ঈদুল ফিতরের
রাতে, (৫) ঈদুল আযহার
রাতে।” (মা ছাবাতা বিসসুন্নাহ,
আমালুল ইয়াত্তমি ওয়াল
লাইলাতি)
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ
হয়েছে-
ﻋﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﻋﻠﻰ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ
ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ
ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻘﻮﻣﻮﺍ ﻟﻴﻠﻬﺎ
ﻭﺻﻮﻣﻮﺍ ﻳﻮﻣﻬﺎ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ
ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻳﻨﺰﻝ ﻓﻴﻬﺎ ﻟﻐﺮﻭﺏ
ﺍﻟﺸﻤﺲ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ
ﻓﻴﻘﻮﻝ ﺍﻻ ﻣﻦ ﻣﺴﺘﻐﻔﺮ
ﻓﺎﻏﻔﺮﻟﻪ ﺍﻻ ﻣﺴﺘﺮﺯﻕ ﻓﺎﺭﺯﻗﻪ
ﺍﻻ ﻣﺒﺘﻠﻰ ﻓﺎﻋﺎﻓﻴﻪ ﺍﻻ ﻛﺬﺍ ﺍﻻ
ﻛﺬﺍ ﺣﺘﻰ ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻔﺠﺮ
অর্থ: “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-উনার
হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ করেন, যখন
শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রি অর্থাৎ
বরাতের রাত্রি উপস্থিত হবে তখন
তোমরা উক্ত রাত্রিতে নামায
আদায়
করবে এবং দিনে রোযা রাখবে।
কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক
তিনি উক্ত রাত্রিতে সূর্যাস্তের
সময় পৃথিবীর আকাশে আসেন
অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন।
অতঃপর ঘোষণা করেন, “কোন
ক্ষমা প্র্রার্থনাকারী আছো কি?
আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।”
“কোন রিযিক
প্রার্থনাকারী আছো কি?
আমি তাকে রিযিক দান করবো।”
“কোন মুছিবতগ্রস্ত
ব্যক্তি আছো কি? আমি তার
মুছিবত দূর করে দিবো।”
এভাবে ফজর পর্যন্ত
ঘোষণা করতে থাকেন।” (ইবনে মাজাহ,
মিশকাত)
উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায়
ইমাম-মুজতাহিদগণ বলেন যে-
ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺒﺮﺍﺀﺓ ﻫﻰ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻌﻔﻮ
ﻭﺍﻟﻜﺮﻡ، ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ ﻭﺍﻟﻨﺪﻡ،
ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺬﻛﺮ ﻭﺍﻟﺼﻠﻮﺓ، ﻟﻴﻠﺔ
ﺍﻟﺼﺪﻗﺎﺕ ﻭﺍﻟﺨﻴﺮﺍﺕ، ﻟﻴﻠﺔ
ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻭﺍﻟﺰﻳﺎﺭﺓ، ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺼﻼﺓ
ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ، ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻜﺮﻳﻢ
ﺗﻼﻭﺍﺓ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ
অর্থ: “বরাতের রাত্র
হলো ক্ষমা ও দয়ার রাত্র,
তওবা ও লজ্জিত হওয়ার রাত্র,
যিকির ও নামাযের রাত্র, ছদক্বা ও
খয়রাতের রাত্র, দোয়া ও
যিয়ারতের রাত্র, দুরূদ শরীফ
তথা ছলাত-সালাম পাঠ করার
রাত্র এবং কুরআন শরীফ
তিলাওয়াতের রাত্র।”
কাজেই, বরাতের রাতে যেহেতু
ওয়াজ নছীহতের আদেশও
করা হয়নি এবং নিষেধও করা হয়নি,
তাই মুছল্লীদেরকে বরাতের রাতের
ফযীলত ও ইবাদত-বন্দেগীর নিয়ম-
কানুন, তর্জ-
তরীক্বা বাতিয়ে দেয়ার
উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত ওয়াজ-নছীহত
করা অবশ্যই জায়িয ও প্রয়োজন।
তাই বলে, সারা রাত্র ওয়াজ
করে মুছল্লীদেরকে নামায,
তিলাওয়াত, যিকির-আযকার,
দোয়া মুনাজাত ইত্যাদি ইবাদত
বন্দেগী হতে মাহরূম করা কখনোই
শরীয়ত সম্মত নয়। বরং হাদীছ
শরীফের খিলাফ। শুধু তাই নয়
এতে হক্কুল ইবাদ নষ্ট করা হয়।
আর হক্কুল ইবাদ নষ্ট
করা কবীরা গুণাহর অন্তর্ভুক্ত।
কারণ ওয়াজ বৎসরের যে কোন
দিনেই করা যায়। কিন্তু বরাতের
রাত্র বৎসরে মাত্র একবারই
পাওয়া যায়। যদি কেউ
পরবর্তী বৎসর হায়াতে থাকে তবেই
সে বরাতের রাত্র পাবে। কাজেই
এই মহামূল্যবান রাত্রকে শুধুমাত্র
ওয়াজ করে ও শুনে অতিবাহিত
করে দেয়া সুন্নতের খিলাফ।
আর সুন্নতের খিলাফ কাজ
করে আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদের
রেজামন্দী বা সন্তুষ্টি কস্মিনকালেও
হাছিল করা সম্ভব নয়।
মূলকথা হলো, বরাতের রাত্র
মূলতঃ ইবাদত-বন্দেগীর রাত্র,
সারা রাত্র ওয়াজ করে ইবাদত
বন্দেগীতে বিঘ্ন
ঘটানো এবং মানুষদেরকে ইবাদত
থেকে মাহরূম করা সম্পূর্ণরূপেই
শরীয়তের খিলাফ। এ ধরণের কাজ
থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্যেই
দায়িত্ব ও কর্তব্য।
[দলীলসমূহ- (১) আহকামুল কুরআন
জাস্সাস, (২) কুরতুবী, (৩) রুহুল
মাআনী, (৪) রুহুল বয়ান, (৫)
ইহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন, (৬)
কিমিয়ায়ে সা’য়াদাত, (৭)
ইবনে মাজাহ, (৮) মিশকাত, (৯)
মাছাবাতা বিসসুন্নাহ, (১০)
মিরকাত, (১১) আশয়াতুল লুময়াত,
(১২) লুময়াত, (১৩) শরহুত্ ত্বীবী,
(১৪) তালিকুছ ছবীহ, (১৫)
মুযাহিরে হক্ব, (১৬) আমালুল
ইয়াউমি ওয়াল লাইলাতি ইত্যাদি]
শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বা গোশত
রুটি পাকানো
উল্লেখ্য, শবে বরাতে হালুয়া-
রুটি অথবা অন্য কোন বিশেষ
খাবার তৈরী করা শরীয়তে নাজায়িয
নয়। শবে বরাত উপলক্ষে বিশেষ
করে আমাদের দেশ ও তার আশ-
পাশের দেশসমূহে যে রুটি-হালুয়ার
ব্যাপক প্রচলন রয়েছে তার
পিছনে ইতিহাস রয়েছে।
ইতিহাসে উল্লেখ করা হয়েছে,
পূর্ববর্তী যামানায় যখন
বর্তমানের মতো বাজার, বন্দর,
হোটেল-রেঁস্তরা ইত্যাদি সর্বত্র
ছিলোনা তখন মানুষ
সাধারণতঃ সরাইখানা, লঙ্গরখানা,
মুসাফিরখানা ইত্যাদিতে ছফর
অবস্থায় প্রয়োজনে রাত্রিযাপন
করতেন। অর্থাৎ মুসাফিরগণ তাদের
সফর অবস্থায় চলার
পথে আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত
জনের ঘর-
বাড়ি না পেলে সাধারণতঃ সরাইখানা,
মুসাফিরখানা ও লঙ্গরখানায়
রাত্রিযাপন করতেন। আর এ
সমস্ত মুসাফিরখানা,
লঙ্গরখানা ও সরাইখানার
দায়িত্বে যারা নিয়োজিত থাকতেন
তারাই মুসাফিরদের খাবারের
ব্যবস্থা করতেন।
বিশেষ করে মুসাফিরগণ
শবে বরাতে যখন উল্লিখিত
স্থানসমূহে রাত্রি যাপন করতেন
তখন তাদের মধ্যে অনেকেই
রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী করতেন ও
দিনে রোযা রাখতেন। যার
কারণে উল্লিখিত স্থানসমূহের
দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ
খাবারের ব্যাবস্থা করতেন
যাতে মুসাফিরদের রাত্রে ইবাদত-
বন্দেগী করতে ও
দিনে রোযা রাখতে অসুবিধা না হয়।
আর যেহেতু হালুয়া-রুটি ও গোশ্ত-
রুটি খাওয়া সুন্নত সেহেতু
তারা হালুয়া-রুটি বা গোশ্ত-রুটির
ব্যবস্থা করতেন। এছাড়াও আরবীয়
এলাকার লোকদের প্রধান খাদ্য
রুটি-হালুয়া বা রুটি-গোশ্ত।
তারা ভাত, মাছ,
ইত্যাদি খেতে অভ্যস্ত নয়।
সেখান
থেকে পর্যায়ক্রমে শবে বরাত
উপলক্ষে হালুয়া-রুটির প্রচলন
আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, কোন আমলের
ক্ষেত্রেই বদ রছম বা বদ প্রথার
অনুসরণ করা জায়িয নেই।
এখন মাসয়ালা হচ্ছে- কেউ
যদি শবে বরাত উপলক্ষে রছম-
রেওয়াজ না করে বা নিজের
ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাঘাত
না ঘটিয়ে উক্ত হালুয়া-রুটির
ব্যবস্থা করে তাহলে তা অবশ্যই
জায়িয। শুধু জায়িয নয় বরং কেউ
যদি তার নিজের ইবাদত-
বন্দেগী ঠিক রেখে অন্যান্যদের
জন্য যারা রাত্রিতে ইবাদত-
বন্দেগী করবে ও
দিনে রোযা রাখবে তাদের ইবাদত-
বন্দেগী ও রোযা পালনের
সুবিধার্থে হালুয়া-রুটি বা গোশ্ত-
রুটি অথবা আমাদের দেশে প্রচলিত
খাদ্যসমূহের কোন প্রকারের
খাদ্যের ব্যবস্থা করে তা অবশ্যই
অশেষ ফযিলত ও নেকির

To Visit on Facebook click here

ভাবা যায়...!! এরা কারা...?

ভাবা যায়...!! এরা কারা...? ক্লাস এইট এর বাংলা পরীক্ষাঃ - ’বিদ্যাসাগর’ রচনা !! এক ছাত্র লিখলঃ "বিদ্যাসাগর পরোপকারী ছিলেন। পরের উপকার...